নেলসন মেন্ডেলা – তাঁর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য

১৮ই জুলাই, আজ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নায়ক দের মধ্যে অন্যতম নেলসন ম্যান্ডেলা -র জন্মদিন।

Nelson Mandela

মহান এই জননেতার সম্মানে প্রতিবছর তার জন্মদিনটি ইন্টারন্যাশনাল  নেলসন ম্যান্ডেলা দেশে হিসেবে পালিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে। ২০০৯ এর ২৭ এপ্রিল নেলসন ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন বিশ্ববাসীকে নেলসন ম্যান্ডেলা দিবস পালনের আহ্বান জানায়। ওই বছরই নভেম্বর মাসে জাতিসংঘ এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক নেলসন ম্যান্ডেলা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। 2010 সালের 18 জুলাই প্রথম পালিত হয় আন্তর্জাতিক নেলসন ম্যান্ডেলা দিবস।

কে ছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা?

নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় রাষ্ট্রনেতাদের একজন। তবে আফ্রিকার মানুষের কাছে তিনি ছিলেন – ‘মাদিবা’। তিনি পেশায় আইনজীবী এবং নীতিতে বিপ্লবী ছিলেন। 

দক্ষিণ আফ্রিকা নিবাসী এই মহান রাষ্ট্রনেতা বর্ণবাদের অবসান ঘটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বহুবর্ন ভিত্তিক গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং সফল হয়েছিলেন। যদিও দীর্ঘ 27 বছর তাকে কারাভোগ করতে হয়েছিল, তবুও তাঁর আদর্শ এবং শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ আফ্রিকানরা বহু সংগ্রামের পর বর্ণবাদের অবসান ঘটিয়ে ছিলেন আফ্রিকার ভূমি থেকে । ১৯৯০ খ্রীষ্টাব্দে নেলসন ম্যান্ডেলার মুক্তির পর তারা তাকে সম্মানে ভূষিত করেন নতুন আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের পদে। 

মেন্ডেলার আদর্শ এবং কর্মনীতি:

নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন রসিক এবং সুবক্তা। প্রথম দিকে তিনি শ্বেতাঙ্গ সরকারের সঙ্গে নরম পন্থায় আপোষ করতে চাইলেও‌ শ্বেতাঙ্গদের স্বৈরাচার প্রত্যক্ষ করে তিনি চরমপন্থা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। তার রাজনৈতিক জীবনে তিনি সবসময় গোষ্ঠী স্বার্থকে ব্যক্তিগত স্বার্থের উপরে রেখেছেন। যেসব শ্বেতাঙ্গ পদাসীনদের ষড়যন্ত্রে তাকে ভোগ করতে হয়েছিল দীর্ঘ 27 বছরের কারাবাস, মুক্তির পর নতুন আফ্রিকার স্বার্থে তাদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ম্যান্ডেলা। বিশ্ব রাজনীতিতে এমন ঘটনা বিরল।

কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর কারাগারের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি যে বক্তৃতা দেন তাতে তিনি বলেছিলেন যে তিনি এমন এক আফ্রিকার স্বপ্ন দেখেন যেখানে সকল ধর্ম সকল বর্ণ সমান অধিকার পাবে এই স্বপ্নের জন্যই তিনি বেঁচে থাকতে চান এবং এই স্বপ্নের জন্য তিনি মরতেও প্রস্তুত। দীর্ঘ নিরলস কর্মজীবনের পর যখন তিনি অবসর জীবনে প্রবেশ করেন তখন তার কাজ থেমে যায়নি । দক্ষিণ আফ্রিকার দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য তিনি নিরলস সাধনা করেছেন। তার একজন সন্তান এইডস রোগে মারা যাবার পর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এইডস  দূরীকরণ এবং প্রতিরোধে সোচ্চার হন। তার এই মহান নীতিবোধ সর্বকালের রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত।

নোবেল,  ভারতরত্ন ও অন্যান্য:

১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার এই মহান ব্যক্তিত্ব ও তার আদর্শকে কুর্নিশ জানান ভারতরত্ন সম্মানে। ১৯৯৩ খ্রীষ্টাব্দে শান্তির জন্য তাকে দেওয়া হয় নোবেল পুরস্কার। এই মহান রাষ্ট্রনেতা কে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল -কিভাবে তাকে স্মরনে রাখলে তিনি খুশি হবেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন – তাকে এমন একজন মানুষ হিসেবে স্মরণ রাখা হোক, যিনি পৃথিবীর প্রতি তার কর্তব্য সম্পন্ন করেছেন। এই নিরহংকার কর্তব্যবোধ যুগে যুগে সকল রাজনীতিবিদ তথা সাধারণ মানুষের পাথেয় হোক। এই উদ্দেশ্যেই আজ , ১৮ ই জুলাই দিনটিতে তার সন্মানার্থে কোন ছুটির দিন হিসেবে নয় , বরং কর্মযজ্ঞের আনন্দের মাঝে বিশ্বব্যাপী স্মরন এবং পালন করা হচ্ছে International Nelson Mandela Day হিসেবে। মানুষের চেতনায় চিরজাগ্রত থাকুক দক্ষিণ আফ্রিকার এই বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের নেতার আদর্শ, নীতি ও জীবনবোধ।

নতুন খবর এবং টেকনিকাল খেলাধুলা জ্ঞান মূলক তথ্য জানতে হলে আমাদের নোটিফিকেশন বেলটি Allow করতে ভুলবেন না এবং আমাদের সাথে জুড়ে থাকবেন

Leave a Comment